রায়পুরে দীর্ঘ দিন ধরে সহোদর কবিরাজের প্রতারনা হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা

রায়পুরে দীর্ঘ দিন ধরে সহোদর কবিরাজের প্রতারনা হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা

নুরুল আমিন দুলাল ভূঁইয়া :-জেলা প্রতিনিধি লক্ষ্মীপুর

 আধুনিক বিজ্ঞান,ফেসবুক,ইনস্ট্রগ্রাম,ট্যুইটার এর যুগেও লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর পৌরশহরের মোরগ হাটা নামক স্থানে আপন দুই সহোদর মিলে ঝাড়ফুঁক,পানিপড়া,তাবিজ তুমার আর যাদুবিদ্যার সাহায্যে হাজার হাজার মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসার চাঞ্চল্যকর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।

আয়ুর্বেদী চিকিৎসার নামে রায়পুর পৌর শহরের মুরগী হাটায় কতিথ হাকীম কবিরাজ কুন্তল চক্রবর্তী (সুমন) ও তার সহোদর ডাঃ বিধান চক্রবর্তী এবং হাকীম সুমিতা চক্রবর্তী নামের এই তিন প্রতারক সাধারণ জনগণকে ধোকা দিয়ে বোকা বানিয়ে প্রায় কয়েক কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন এরইমধ্যে।

রীতিমত চেম্বার খুলে সময়মত আবার পানি পড়া দেওয়া,ভাগ্যরাশী গণনা,কালা যাদু করা,বান টোনা কাটানো বা করা ইত্যাদি বাত,চর্ম,যৌন ও অন্যান্য সকল রোগের নতুন ও পুরাতন রোগীর চিকিৎসা দিয়ে আসছে বলেও জানায় কতিথ ডাঃ বিধান চক্রবর্তী।

রায়পুর পৌর শহরের মুরগীহাটা নামক ঐ স্থানে নিজেদের বিশাল সম্রাজ্য আর “মেসার্স এইচ.কে.সুমন ঔষধালয় (কবিরাজ ঘর) নামক প্রতিষ্ঠান খুলে প্রতিদিনই রায়পুর উপজেলা ও পাশ্ববর্তী এলাকা গুলো থেকে আসা অসংখ্য নারী পুরুষের সাথে এইধরনের প্রতারনা মূলক ব্যাবসা করে আসছে উল্লেখিত অই তিন কবিরাজ।

অথচ চেম্বারে বসা কুন্তল চক্রবর্তী সুমনের সহোদর বিধান চক্রবর্তী নিজেই এই প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেন এইসব ঝাড়ফুঁক মানে ঝড়ে বক মরার মত ঘটনা ! তাহলে কেন মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন এবং সাধারণ লোকদের কাছ থেকে হাজার পনের’শ টাকা করে আদায় করে নিচ্ছেন এমন এক প্রশ্নের জবাবে বিধান চক্রবর্তী বলেন এখানে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়ে যায়,যদি টাকা না নেই তাহলে আমরা মানুষকে জায়গা দিতে পারবোনা।

পেটের ভিতরের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার বা কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করার নামে হাবে সুরাঞ্জম নামের বিশেষ একটি ঔষধ ও নিজেরাই নিজেদের মত তৈরি করে নিচ্ছেন (যা কিনা দেখতে ছাগলের মল এর মত) অথচ অই ঔষধ উৎপাদনের তারিখ বা মেয়াদোর্ত্তীন্ন তারিখ কিছুই উল্লেখ নেই বা থাকে না।

ল্যাবরেটরী থেকে কোন পরীক্ষা নিরিক্ষারও কোন প্রয়োজন মনে করছেন না কতিথ অই ডাঃ মশাই’রা। রায়পুর উপজেলার ৬নং উত্তর কেরোয়া ইউনিয়নের ঠাউর বাড়ীর এই তিনজন বংশ পরিক্রমায় এই ব্যাবসা করে আসছেন বলে জানাযায়। নিজ এলাকায় বিভিন্ন নামে প্রায় কয়েক কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় ও বানিয়ে নিয়েছেন তারা।

রায়পুর পৌর শহরের (রায়পুর বাজার) মত জায়গায় বেশ কয়েক শতাংশ জমি কিনে সেখানে পাকা দালান বানিয়ে নিয়েছেন এই সম্বলিত প্রতারক চক্র। চেম্বারের সামনের অংশে আয়ুর্বেদী ঔষধপত্ত আর পিঁছনের অংশে চলে হাত গণনা,ভাগ্যরাশি গননা,বানটোনা পরীক্ষাসহ পানিপড়া দেওয়া এবং তাবিজ কবজের মহা ব্যাবসা। ব্যাবসা চালাতে নিয়ন্ত্রন করছেন বিশাল সিন্ডিকেট বাহিনী। চেম্বারে সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে সরে পড়েন কতিথ ইউনানী কবিরাজ কুন্তল চক্রবর্তী।

লক্ষ্মীপুর বার এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট আইনজীবি এডঃমিজানুর রহমান মুন্সি বলেন যারা চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা,হেকেমী,পানিপড়া,তাবিজ তুমার দিয়ে মানুষকে ধোকা দেয়, অর্থ হাতিয়ে নেয় তাদের বিরুদ্ধে স্পেশাল আইনী ব্যাবস্থা রয়েছে।

বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। রায়পুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ মেজিস্ট্রেট আখতার জাহান সাথী’কে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করা হলে তিনি প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান।

আপনি আরও পড়তে পারেন